গাড়ির চাকায় পিষ্ট রুবিনার এতিম ছেলের দায়িত্ব কে নেবে!

নিশ্চুপ রোহান এখনও ঠিক মতো জানে না তার মায়ের সঙ্গে কি ঘটেছে। শুধু এটুকু জানে- একটা প্রাইভেটকার তার মায়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে। করোনাকালে বাবাকে হারিয়ে এতিম রোহানের ভরসা ছিল মা রুবিনা আক্তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চালকের নৃসংশ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে মাও চলে গেলেন অপারে। এই দুনিয়ায় তার আপন বলে আর কেউ রইলো না। এ ঘটনার পর থেকে এতিম রোহান কেমন যেন চুপ হয়ে গেছে। ক্ষণে ক্ষণে মাকেই খুঁজে ফিরছে। কারো সঙ্গে তেমন কথা বলছে না। মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই শুধু বললেন- আমার মায়ের হত্যার বিচার চাই।

নিহত রুবিনার স্বজনরা জানান- রোহানকে নিয়ে স্বামী হারা রুবিনা থাকতেন তেঁজগাও এলাকায় নিজেদের বাসায়। কিন্তু ভাই-বোন সবাই হাজারীবাগের ভাগলপুর লেনে থাকায় প্রতি শুক্রবার বিকালে সবার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতেন। গত শুক্রবারও যাচ্ছিলেন হাজারীবাগ। বোন জামায়ের বাইকে চড়ে শাহবাগ থেকে টিএসসি হয়ে যাওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আজহার জাফর শাহ তার প্রাইভেটকারের নিচে চাপা দিয়ে রুবিনাকে প্রায় দুই কিলোমিটার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যান। পথচারীরা ধাওয়া দিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে ওই গাড়ি থামিয়ে রুবিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে তিনি সেখানে মারা যান।

রুবিনার মৃত্যুর পর একমাত্র সন্তান অভিভাবকহীন হওয়ার তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কায় স্বজনরা। তাই এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের পাশাপাশি এতিম রোহানের দায়িত্ব যেন সরকার নেয় সেই দাবি জানিয়েছেন তারা। এই ঘটনায় জনতার গণপিটুনিতে মুমূর্ষু চালক জাফর শাহকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শাহবাগ থানায় তাকে এক মাত্র আসামি করে মামলা করেছেন রুবিনার স্বজনরা। মামলায় ওই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে সেদিনের ওই ঘটনার কথা ভুলতে পারছেন না প্রত্যক্ষদর্শীরা।

অভিযুক্ত ঐ সাবেক শিক্ষক হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে আইনগত ব্যবস্থা শুরু হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ। সেদিন প্রাইভেটকারকে ধাওয়া করার সময় নৃশংস ওই ঘটনার দৃশ্য ধারণকারী ব্যক্তিকে এক নজর দেখতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা

About the Author: Boss

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *